২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

গৃহবধূ নূরজাহানের মূত্যুর দায় নিবে কে ? মাদারল্যান্ড নিউজ

স্টাফ রিপোটার,সোহানুল হক পারভেজ,তানোর (রাজশাহী) :
রাজশাহীর তানোরে অস্তঃস্বত্ত্বা এক গৃহবধূর মূত্যুর ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, বইছে মূখরুচোক নানা গুঞ্জন। এদিকে তার শশুর বাড়ির লোকজন এটাকে স্বাভাবিক মূত্যু দাবি করলেও স্থানীয়দের দাবি নূরজাহানের পরিবার যৌতুকের দাবি পুরুণে ব্যর্থ হওয়ায় তার শশুর বাড়ির লোকজন নুরজাহানকে ধীরে ধীরে মূত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্থানীয়রা আরো জানায়, সরেজমিন অনুসন্ধান করলেই নূরজাহানের মূত্যুর আসল রহস্য উৎঘাটন হবে। তারা বলেন, জামাই শাহাবুদ্দীন ও শশুর ওমর ফারুক কোনো ভাবেই এই মূত্যুর দায় এড়াতে পারে না।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তানোরের পাঁচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের কন্যা নূরজাহান (১৮) এর সঙ্গে পাঁচন্দর গ্রামের বাসিন্দা ওমর ফারুকের পুত্র শাহাবুদ্দীনের বিয়ে হয় প্রায় দেড় বছর। তবে শাহাবুদ্দীনের পরিবার মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শাহাবুদ্দীনের সঙ্গে নুরজাহানের বিবাহ দেয়। বিয়ের পরে নুরজাহানের পরিবার শাহাবুদ্দীনকে একটি মোটরসাইকেল, নগদ টাকা ও আসবাবপত্রসহ প্রায় তিন লাখ টাকার মালামাল দিয়েছেন। এদিকে শাহাবুদ্দীনের পরিবার এবার যৌতুক হিসেবে গরু দাবী করে গরু দিতে ব্যর্থ হলে তারা নূরজাহানের পরিবারের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বিয়ের পর নুরজাহান অন্তঃস্বত্ত্বা হলে সন্তান প্রসবের জন্য বাবার বাড়িতে আসে ও দীর্ঘ দুই মাস অবস্থান করেন এই সময়ের মধ্যে একটি বারের জন্যও শাহাবুদ্দীনের পরিবার কোনো যোগাযোগ করেনি। ওদিকে দরিদ্র পিতার পরিবারে অন্তঃস্বত্ত্বা নূরজাহান চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ পড়ে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নুরজাহানকে ভর্তি করা হয়। এদিন দিবাগত রাতে নূরজাহান সন্তান প্রসব করে এবং পহেলা মে মূত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ওদিকে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবেই নূরজাহানের মূত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন গ্রামবাসী। এ ঘটনায় চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের বাড়িতে সামাজিকভাবে সালিশ বৈঠক বসে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওমর ফারুক ও শাহাবুদ্দীনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সালিশে নুরজাহানের পরিবারকে ক্ষতিপুরুণ বাবদ দেড় লাখ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্র ফেরৎ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তারা উভয় পক্ষ বিষয়টি মেনেও নেয়। কিন্তÍ শাহাবুদ্দীনের পরিবার এসব না দিয়ে নানা রকমের তালবাহানা শুরু করে। এদিকে চলতি বছরের ২৩ মে বৃহস্প্রতিবার উভয় পক্ষকে নিয়ে তানোর থানায় ফের সালিশ বৈঠক বসে সেখানে নুরজাহানের পরিবারকে ৮০ হাজার টাকা ও ছেলের পরিবারকে স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দিয়ে বিষয়টি ফয়সালা করা হয়েছে বলে তার পরিবার জানান। এব্যাপারে ওমর ফারুক ও শাহাবুদ্দীন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা স্বাভাবিক মূত্যু তার জন্য কেউ দায়ী নয়, তিনি বলেন, থানায় বসে বিষয়টি আপোষ-মিমাংসা করা হয়েছে। এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন, এ্যাডঃ আব্দুল আহাদ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ বসে বিষয়টি ফয়সালা করে দিয়েছেন।

প্রকাশিত:মাদারল্যান্ড ডেস্ক

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ